বাচ্চার আম্মুরা সাবধান হোন!
গ্রাম থেকে শহরে ফেরার পর মেয়ে আমার একদম একা হয়ে যায়।এবার আবার পাশের বাসার ভাবিও সপ্তাহখানের পর বাপের বাড়ী থেকে ফিরেছেন।মেয়ে মোটামুটি ২সপ্তাহ পর একজন খেলার সাথী পেয়ে ইচ্ছে মতো (প্রতিবেশী ভাবির বেবীর সাথে) খেলেছে।মেয়ের এমন উৎফুল্লতা দেখে, ভাবির ছেলের যে স্ক্যাবিজ হয়েছিলো আমি তা বেমালুম ভুলে যাই।কিন্তু খটকা লাগে পরদিন সকালে।গতদিন রাতে পুরা রাত ঘুমাতে দেয়নি।সারারাত শরীর চুলকাতে চুলকাতে পা কোমর হাত ছিলে ফেলেছে।ছেলা জায়গায় আবার চুলকানি দিয়ে বড় বড় করে চিৎকার।এভাবেই গেছে রাত।সকালেও কেবল কোমড়ের একপাশে ইচ্ছে মতো চুলকায়া লাল বানিয়ে ফেলছে।
কোনোভাবে ভেবে পাচ্ছিলাম না কি হইছে! মশাও কমড়ায়নি। কোনো গোটাও নেই।এন্টিবায়োটিক/ এমন কোনো খাবার ও দেইনি যে এলার্জি রিয়েকশন করবে।তাহলে কী? দুইজন মিলে কেবল মনিটরিং এ রাখছিলাম।তার ১/২ ঘন্টা পর তার শরীর আবার চেক দিলাম। ওমা! ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র গোটা দিয়ে কোমড়টা ভরে গেছে। দেরি না করে হালকা গরম পানি করে গোছল করালাম।চুলকানি কিছুটা কমেছে।তবে গোটা বাড়ছিলো।
তারপর দুপুরের পর ডাক্তার দেখালাম।ডাক্তার চেক করে বলে স্ক্যাবেজ হয়েছে।সকালে একবার ভেবেছিলাম কিন্তু তার ( ভাবি) ছেলের অসুখ তো মোটামুটি ভালো হয়ে গেছে।তাই বিষয়টা পাত্তা দিইনি।তবে কিঞ্চিৎ সন্দেহ করেই দেরি না করে কম থাকতে থাকতে ডাক্তার দেখাই।ডাক্তার একটা মলম আর মেডিসিন লিখে দেন।আলহামদুলিল্লাহ। আজ লাস্ট ওইকে।।যদিও শরীরে গোটা গুলো একদমই নেই।তবুও তাকে ট্রিটমেন্ট দিয়ে যাচ্ছি।একদম পরিপূর্ণ সুস্থ না হলে কোনো বাচ্চার সাথে গা ঘেষতেও দেবো না। কারণ আমি সচেতন!জানি রোগ মুক্তির পরও কিছু জীবানু থেকে যায় যা আবার ইফেক্ট করতে পারে নতুনভাবে।আর আমি বিশ্বাস করি রোগ সংক্রামণ করতে পারে।এর ফলে ক্ষতি হতে পারে।তাই নিজের বাচ্চার সাথে যতটুকু ধকল গেছে; চাই না অন্য বাচ্চাদের নিয়ে তার মা/বাবারা এমন হ্যারাজ হোন।
তবে, এখনও অনেকে বিশ্বাস’ই করছেন না এই স্ক্যাবেজ সংক্রামক। এর জীবানু রক্তে মিশে গেলে সহজে রোগ ভালো হওয়ার চাঞ্ছ কম।আরো দুঃখ পেয়েছি ভাবির বিষয়টিতে।ভাবি বার বার ছেলেকে নিয়ে বাসায় খেলাতে আসেন।যা এখন এ মুহুর্তে অনুচিত।এবার আরো লক্ষ করে দেখলাম ছেলের কানে হাতের পেছন পাশে আরো কিছু গোটা আছে।সাথে চুলকানিও। তাঁকে তাই না পেরে সরাসরি বিনয়ের সাথে বুঝালাম যে এটা সংক্রামক।পুরোপুরি ভালো না হলে আবার হতে পারে।আসেন সচেতন থাকি।কিন্তু ভাবির মত এটা সংক্রামকই না।ইসলামে ছোঁয়াচে রোগ বলে কিছু নাই।আরো অনেক কথা।দেখলাম বলে লাভ হলো না উল্টো ভাবি মাইন্ড করে বসলেন। ভাবলেন বাচ্চাকে ঘৃণা করেছি।তবুও ফোন কলে/ বারান্দায় দাঁড়িয়ে গসিপ করে চেষ্টায় আছি ভাবির দরকারে অদরকারে যোগাযোগ রাখতে।যেন তিনি অনুভব করেন আমি তাঁদের ঘৃণা করি নি।তবে আগের মতো আন্তরিকতাটুকু যে কমে গেছে সেটা বুঝতে পারছি! কী করার??
বাচ্চারা একএকটা ফুলের মতো।তাদের ঘৃণা করার প্রশ্নই উঠে না।বরং, এ রোগ সম্পূর্ণ ভালো না হলে নিজেদেরও বাচ্চার সাথে দূরত্ব বজায়া রাখা উচিৎ যদিও তা কঠিন।তবে দু’আ এবং পরিচ্ছন্নতার বিকল্প দেখি না।কারণ রোগটা ভয়ঙ্কর! চলে গিয়ে ফিরে আসে! রক্তে মিশে গেলে ভয়ঙ্কর রূপ নেয়।আর চুলকানির কথা না বলি!
সব মায়েদের উদ্দেশ্যে বলছি—
বাচ্চাকে সবার সাথে মিশতে দিন, তবে জেনে নিন সংক্রামক কোনো রোগ আছে কী-না।জানতে পারলে এরিয়ে চলুন।এটা আপনার বাচ্চার সেইফটি দেবে।তবে রোগীর সাথে /তার পরিবারের সাথে শারীরিক দূরত্ব বজায়া রেখে যোগাযোগ রাখুন।যেন সহানুভূতি পান।না ভাবেন আমরা তাদের ঘৃণা করছি! আল্লাহ আমাদের পাখিগুলোকে সবসময় সুস্থ সুন্দর রাখুন।এটাই কামনা করি।
লিখেছেনঃ মেহের আফরোজ
📢 স্ক্যাবিস (Scabies): তীব্র চুলকানির কারণ ও প্রতিকার!
😖 স্ক্যাবিস হলো এক ধরনের চর্মরোগ, যা Sarcoptes scabiei নামক মাইট 🪳 দ্বারা হয়। এই মাইট ত্বকের নিচে গর্ত করে ডিম পাড়ে, যার ফলে তীব্র চুলকানি 🤧 ও লাল ফুসকুড়ি দেখা দেয়।
🔍 লক্ষণসমূহ:
✅ তীব্র চুলকানি (বিশেষত রাতে)
✅ ছোট ছোট ফুসকুড়ি বা লাল দাগ
✅ ছোট গর্তের মতো দাগ
✅ হাতের আঙুলের ফাঁক, বগল, কুঁচকি, কোমর ও যৌনাঙ্গে বেশি প্রভাবিত হয়
✅ সংক্রমণের জায়গায় চামড়া শক্ত বা পুরু হয়ে যায়
🤝 কীভাবে ছড়ায়?
👫 সরাসরি ত্বক স্পর্শে
🛏️ একই বিছানা, কাপড় বা তোয়ালে ব্যবহার করলে
🏢 জনাকীর্ণ স্থানে বা শিশুদের মধ্যে সহজে ছড়ায়
⚠️ কারা বেশি ঝুঁকিতে?
👶 শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি
🏘️ অনুন্নত এলাকায় বসবাসকারী
🧪 রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকা ব্যক্তি
💊 চিকিৎসা:
একজন চর্ম বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন
🛡️ প্রতিরোধের উপায়:
🧺 পোশাক ও বিছানাপত্র গরম পানিতে ধুয়ে শুকাতে হবে।
👨👩👧👦 পরিবারের সকল সদস্যকে চিকিৎসা করাতে হবে।
🚫 আক্রান্ত ব্যক্তির সঙ্গে শারীরিক সংস্পর্শ এড়াতে হবে।
🧴 নিয়মিত পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে হবে।
⚠️ মনে রাখুন:
📆 চিকিৎসার পুরো কোর্স শেষ না করলে রোগ ফিরে আসতে পারে।
👨⚕️ চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ ব্যবহার করবেন না।
🙌 ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখলে সহজেই এই রোগ প্রতিরোধ করা যায়!
শেয়ার করে অন্যদেরও সচেতন করুন!
(এ লেখাটা সংগ্রহ করা)