বিয়ের পর প্রত্যেক নারীর স্বপ্ন থাকে গর্ভধারনের। ছোট ছোট হাতগুলো তার মুখখানা ধরবে, তার হাতের উপর হাতগুলো রাখবে, তাকে দেখে হাসবে সুবহানাল্লাহ। কি সুন্দর হয় সেই দৃশ্যগুলো!!
একজন নারী কনসিভ করার পর স্বাভাবিকভাবেই খুবই এক্সাইটেড হয়ে যায় তার অনাগত সন্তানের জন্য। আনন্দে উত্তেজনায় তার হৃদয়ে ঢেউ খেলে।
কিন্তু সেই আনন্দের পাশাপাশি তার অন্তরে আবার একটা অজানা ভয়ও কাজ করতে থাকে...
"আমার সোনাটা ঠিক আছে তো? পেটের ভিতর সে ভালোভাবে বেড়ে উঠছে তো?! আমার জন্য তার কোন সমস্যা হচ্ছে না তো!?!সব ধরনের পুষ্টি সে পাচ্ছে তো!?!!.." এমন নানা রকম চিন্তা ভাবনা মায়ের মস্তিষ্কে ঘুরপাক খেতে থাকে।
মহান রব্বুল আ'লামীন সব কিছু সহজ করার মালিক। একমাত্র তিনিই সব সমস্যা থেকে বান্দাকে মুক্তি দেন আলহামদুলিল্লাহ। প্রেগন্যান্সির যাত্রাকে এজন্যই বিস্ময়কর যাত্রা বলেছি কারন স্টেপ বাই স্টেপ একজন মা অব্জার্ভ করতে পারবে যে তার রব কিভাবে তার এই যাত্রাকে সহজ করে দিচ্ছেন সুবহান আল্লাহ ❤️❤️
তাই যেদিন কন্সিভ করার খবর জানবেন সেদিনই স্বামীকে নিয়ে একসাথে দুই রাকা'আত নফল সলাত আদায় করে ফেলবেন ইনশাআল্লাহ। মহান রবকে শুকরিয়া জানিয়ে নতুন একটা ফ্রেশ স্টার্ট করবেন। ৫ ওয়াক্ত সলাত নিয়মিত আদায় করতে হবে। স্বাভাবিকভাবে নন প্রেগন্যান্ট অবস্থায় যেভাবে আদায় করতেন ঠিক সেভাবে আদায় করবেন ইনশাআল্লাহ যদি কোন সমস্যা ফিল না হয়। ডাক্তারের সাথে দ্রুত যোগাযোগ করতে হবে এবং খুব ভালো হয় যদি হাজব্যান্ড সহ সেই ডাক্তারের সামনে উপস্থিত হন। কারন মূলত আপনারা "প্রেগন্যান্ট"। একজন নারী যেমন প্রথমবার মা হচ্ছেন তেমনি একজন পুরুষও প্রথমবার " বাবা" হতে যাচ্ছেন। কিন্তু পুরুষদের সেটা অনুভব করাতে হয়, ফিল করাতে হয়। অনেক স্বামীরাই আছেন যে স্ত্রী প্রেগন্যান্ট এটা শুনে সাথে সাথে বাবার বাড়ি পাঠিয়ে দেন। এরপর আর কোন খোজখবর নেন না। হয়তো আমার সাথে একমত হবেন না কিন্তু ব্যক্তিগত ভাবে এই বিষয়টা অপছন্দনীয় আমার নিকট। বাচ্চা আসার আনন্দ, উদ্বেগ, দায়িত্ব দুইজনকেই অনুভব করতে হবে বলে মনে করি।
কন্সিভের পর কিছু লক্ষন দেখা যায়। সবার যে একই লক্ষন হবে তা কিন্তু না... একেক মায়ের সিম্পটমস একেক রকম। তবে কমন লক্ষন হচ্ছে পিরিয়ড অফ হয়ে যাওয়া 🤣।
বাকী লক্ষনগুলো থাকতেও পারে আবার নাও পারে।
যদি কোন লক্ষন না থাকে আর খাওয়ার রুচি থাকে আলহামদুলিল্লাহ তাহলে যা মন চায় খাবেন ( except পেপে, আনারস)। খাওয়ার ব্যপারে কোন কারপন্য করা যাবে না।
আর যদি বমি থাকে, খাওয়ায় অরুচি থাকে তাহলে অন্তত পানি, ফলমূল খাওয়ার সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাবেন। পরে বমি বন্ধ হলে স্বাভাবিকভাবে সব খাবার খেতে শুরু করতে হবে।
প্রেগন্যান্সির শুরু থেকে কুর'আন তিলাওয়াত করতে হবে, শুনতে হবে। মনকে শান্ত রাখার যথেষ্ট করতে হবে। এসময় হরমোনাল ইম্ব্যালেন্সের জন্য, অতিরিক্ত আবেগপ্রবন হওয়ার জন্য অনেক উল্টাপাল্টা চিন্তা মাথায় ঘুরতে পারে। আবার আশেপাশে অতিরিক্ত জ্ঞানীগুনীদের উপদেশ শুনতে শুনতে মাথা হ্যাংক হতে পারে!! সব উপেক্ষা করে এক আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল রাখতেই হবে। আল্লাহ আপনার সাথে যাই করছেন যাই করবেন সেটাই আপনার জন্য বেস্ট সিচুয়েশন।
গিলটি ফিল নিয়ে থাকা যাবে না। কোন ধরনের নেগেটিভিটিতে ভোগা যাবে না। তবে একটা বিষয় অবশ্যই সত্যি আর তা মস্তিষ্কে এবং মনে গেথে রেখে এই দু'আ করতে হবে,
" হে আমার রব! তুমিই একমাত্র আমার এবং আমার সন্তানের মালিক। আমরা তোমারই বান্দা।
ইয়া আল্লাহ তুমি যদি এই সন্তানকে দুনিয়ায় আমার কাছে নিয়ামত হিসেবে দাও তাহলে আমাকে এমন ভাবে তৌফিক এবং বারাকাহ দাও যেন আমি তার তরবিয়ত ভালোভাবে দ্বীনের পথে করতে পারি কিন্তু যদি সে দুনিয়ায় না আসে তাহলে আমাকে এমনভাবে প্রস্তুত থাকার তৌফিক দান করো আমি যেন সবর করতে পারি।"
ইনশাআল্লাহ আশা করি এই দু'আর পর মনোবল আরো শক্ত হবে ❤️